আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে ত্বক পরিচর্যায় নিম পাতার উপকারিতা অনেক বেশি। আর স্বাস্থ্যকর ত্বকের জন্য প্রকৃতির ছোঁয়া চিরদিনের বন্ধু হয়ে রয়েছে আমাদের সাথে। শুধু তাই নয়, ত্বকের যত্নে কেমিক্যালের ব্যবহার কিন্তু দিন দিন কমে আসছে। কারণ, প্রাকৃতিক উপাদানে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে না।
হঠাৎ আবহাওয়ার পরিবর্তন হলে কিংবা খাদ্যতালিকায় একটু বেহিসাবি খাওয়া হয়ে গেল মুখে ব্রণ ইত্যাদি সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। কখনও বা শরীরের অভ্যন্তরীণ অন্যান্য সমস্যার কারণেও ব্রণ, হোয়াইট হেডস, ব্ল্যাকহেডস, পিম্পল এর মতন সমস্যাগুলি লক্ষ্য করা যায়।
তবে এর সমাধান কিন্তু আমাদের হাতের কাছেই রয়েছে। নিম পাতার মধ্যে ভিটামিন-ই প্রচুর পরিমাণে থাকার কারণে এটি ত্বককে যথার্থ আর্দ্রতা প্রদান করে থাকে। এছাড়াও নিমপাতা সিদ্ধ করে নিয়ে সেই পানি প্রতিদিন ত্বকে লাগালে ত্বক সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। এবার জেনে নিন কয়েকটি প্রাথমিক ত্বকের সমস্যার সমাধানে নিমের পাতার উপকারিতা গুলি।
১. ক্ষত এবং ফুসকুড়ি নিরাময়ে নিম পাতার উপকারিতা:
নিম তেলের মাধ্যমে তৈরি বিভিন্ন উপাদানগুলি দীর্ঘস্থায়ী ত্বকের সমস্যাগুলির চিকিৎসা করে থাকে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে, নিম এবং হলুদের মিশ্রণ ত্বকের মধ্যে দীর্ঘস্থায়ী রোগের লক্ষ্যণগুলি নির্মূল করে। আলসার কিংবা ত্বকের যেকোনো দাগ-এর চিকিৎসা নিম দিয়ে করা হয়ে থাকে। তবে এটি কেবল মাত্র বড়দের জন্যই। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি সরাসরি ত্বকে ব্যবহার করা ঠিক হবে না। নিমের মধ্যে থাকা অ্যান্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্যগুলি ত্বকের যেকোনো জীবাণুর সংক্রমণ থেকে ত্বককে রক্ষা করতে পারে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
১. পানি ভালো করে ফোটাতে হবে।
২. তারমধ্যে ১০-১৫ টি নিম পাতা দিয়ে দেবেন।
৩. পাতাটি বিবর্ণ হওয়া পর্যন্ত ফুটিয়ে যাবেন।
৪. পানির পরিমাণ যখন অর্ধেক হয়ে আসবে তখন গ্যাস নিভিয়ে দেবেন।
৫. এবার এই পানি ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করবেন।
৬. প্রতিদিন রাতে শুতে যাওয়ার আগে তুলোয় ভিজিয়ে নিয়ে সারা মুখে লাগিয়ে শুয়ে পড়বেন।
৭. এছাড়াও আপনার স্নানের জলে কয়েক ফোঁটা নিম তেল মিশিয়ে স্নান হয়ে গেলে জলটা সারা শরীরে ঢেলে দিন এর ফলে শরীর জীবাণুমুক্ত থাকবে।
২. ব্রণ নিরাময়ে নিম পাতার উপকারিতা:
তৈলাক্ত ত্বকের অধিকারী যারা তাদের ক্ষেত্রে একটি বড় সমস্যা হল ব্রণ। তবে এক্ষেত্রে এটি নিরাময়ের জন্য হাতের কাছেই রয়েছে নিমপাতা। পাশাপাশি যে সমস্ত ব্রনর কারনে ব্রেকআউট ত্বকে দেখা যায় সে গুলির সমাধানেও নিমপাতা ব্যাবহার করতে পারে। নিম পাতা এবং হলুদের পেস্ট নিয়মিত ব্যবহার করার ফলে মুখে ব্রনর দাগ কমে যেতে সহায়তা করে এবং এটি ত্বককে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন এবং উজ্জ্বল করে তোলে।

এর পাশাপাশি নিমের মধ্যে রয়েছে অন্যতম ময়েশ্চারাইজিং বৈশিষ্ট্যসমূহ। যা ত্বককে খুব বেশি তৈলাক্ত না করে শুষ্কতা থেকে মুক্তি দেয় এবং ত্বকের ভারসাম্য রক্ষা করে। ত্বকে যেকোনো ধরনের চুলকানির ক্ষেত্রে নিম পাতার ব্যবহার করা যেতে পারে। এর পাশাপাশি চোখের ডার্ক সার্কেল দেখা দিলেও সেক্ষেত্রেও নিমপাতার ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। চোখের ডার্ক সার্কেল কমাতে ও নিম গুরুত্বপূর্ন ভূৃমিকা নিয়ে থাকে।
কিভাবে ব্যবহার করবেন?
১. নিম পাতা পানিতে ফুটিয়ে নিয়ে টোনার হিসেবে ব্যবহার করতে পারেন।
২. ব্রণের দাগ এবং পিগমেন্টেশন নিরাময়ের জন্য নিম পাউডার পানির সাথে মিশিয়ে ব্রণের দাগের ওপর ব্যবহার করতে পারেন।
৩. ত্বকে অত্যধিক ব্রণর সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিম তেল ব্যবহার করতে পারেন।
৪. নিম পাতা, তুলসী এবং চন্দন কাঠের গুঁড়ো ভালো করে পেস্ট করে নিয়ে গোলাপজল দিয়ে মিশিয়ে ব্যবহার করতে পারেন।
৫. এই মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে বিশ মিনিট অপেক্ষা করে ধুয়ে ফেলুন। এতে ব্রণর সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
৬. ব্ল্যাকহেডস ও হোয়াইটহেডস এর সমস্যা থাকলে ২ থেকে ৩ ফোটা নিম তেল পানির সাথে মিশিয়ে মুখে মেখে ১৫ মিনিট রেখে মুখ ধুয়ে ফেলুন।
৭. নিম পাতা সিদ্ধ করে নিয়ে তারমধ্যে কমলালেবুর খোসা এবং বিট দিয়ে ভালো করে ফুটিয়ে নিন কমলালেবুর খোসা এবং নরম হয়ে এলে সেটা প্যাক বানিয়ে মুখে লাগিয়ে নিন এবং অপেক্ষা করুন সমস্যার পাশাপাশি দাগ দূর হবে।
৮. এই প্যাকটি ব্রণ পরিষ্কার করতে সহায়তা করবে। ব্রণ দূর করতে নিয়মিত নিম পাউডার ব্যবহার করতে পারেন।
৯. নিম পাতার গুড়া গোলাপজলে মিশিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে মুখে লাগান এবং আপনার ত্বক যদি খুব শুষ্ক হয় সেক্ষেত্রে এই প্যাকটিতে সামান্য পরিমাণে মধু এবং দই যোগ করতে পারেন।
১০. এছাড়া গোসলের সময় সারা গায়ে মাখার জন্য নিম সাবান ব্যবহার করতে পারেন কিংবা নিমপাতা ভিজানো জল স্নানের পর গায়ে ঢালতে পারেন এতে যেকোনো ধরণের ত্বকের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
নিম পাতার উপকারিতা এবং কীভাবে ব্যবহার করতে হয় তা আমরা জেনেছি। কিন্তু সব সময় ত্বকের যত্নের জন্য এসকল উপদান গুলো হাতের কাছে পাওয়া নাও যেতে পারে। তার জন্য কী আমরা ব্যবহার করবো না? তা হতে পারে না।
তাই আপনার ত্বকের যত্নে নিম, তুলসী ও এলোভেরার সমন্বয়ে আমাদের কাছ হতে নিম-এলো-তুলসী ফেস ওয়াসটি সংগ্রহ করতে পারেন। স্পেশালি এই ফেস ওয়াসটি মেকআপ তুলতে খুবই সাহায্য করে। এছাড়াও ব্রণ দূর করবে মাত্র ৩ সপ্তাহে নিয়মিত ব্যবহারে।
-
নিম অ্যালো তুলসি ফেস ওয়াস৳ 275.00
আপনার যদি তৈলাক্ত ত্বক হয় তাহলে এই অরেঞ্জ ফেস ওয়াসটি আপনার জন্য খুবই কার্যকরী হবে।
-
অরেঞ্জ ফেসওয়াস৳ 275.00
নিম অ্যালো তুলসি ফেস ওয়াসের কার্যকারিতা
১. ত্বকে বলিরেখা রোধ করে, যৌবন ধরে রাখে ও পিম্পল দূর করে।
২. মেকআপ উঠাতে ব্যবহার হয়
৩. ভিটামিন এ, বি, বি১, বি২, বি৩, বি৬, বি১২ সমৃদ্ধ, যা ত্বকের সুস্থতায় বিশেষ কার্যকর।
৪. অ্যান্টিসেপটিক, তাই জীবাণুর আক্রমন থেকে ত্বককে রক্ষা করে, মসৃণ, কোমল ও উজ্জল করে।
৫. ফাংগাস ও ব্যাকটেরিয়া বিরোধী, তাই ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে।
৬. ভিটামিন ই ও ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা ত্বকের সুরক্ষায় কাজ করে
৭. টোণার হিসেবে কাজ করে এবং ইনফকশেন, চুলকানি ও অ্যালার্জি দূর করে।
৮. মুখের ক্ষত চিনহ ও মুখের কালো দাগ দূর করে।
উপাদানসমূহ
এলোভেরা, নিম, তুলসি, পলিমার, বুস্টার, শসা, একোয়া, গ্লিসারিন, সিএপিবি, পিইজি-৪০০, এম পি পি, এম পি এস, পারফিউম ইত্যাদি।